
স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকার ধামরাইয়ে আলাদীনস পার্কে বনভোজনে আসা ঢাকার মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট কলেজের শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন হারানোর ঘটনায় পার্কের কর্মচারীদের সঙ্গে মারামারি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এতে পার্কের মালিকের ছেলে রিফাত মাহমুদ, পার্কের ম্যানেজার রনি, পার্কের মালিক আলাউদ্দিন ও কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ মামলার বাদি হয়েছেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল হাই মজুমদার।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকার আলাদীনস পার্কে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পার্কের ভেতরে অফিসের সামনে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন হারানোর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পার্কের মালিকের ছেলে রিফাত মাহমুদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শিক্ষক মন্ডলীসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষক রিপন হালদারসহ শিক্ষার্থী নাফিস, আহনাফ, তুর্য, হাসান আল মুক্তাহিদ, জাকারিয়া, গোলাম সারোয়ার, আবু আল মাহিয়ানকে রক্তাক্ত জখম করে। এ ছাড়া আরো কয়েকজন আহত হয়েছে।
পার্কে আসা শিক্ষার্থীদের বহনকারী ৮টি বাস ভাঙচুর করে পার্কের স্টাফ ও কর্মচারীরা। আহতদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ২০-২৫টি এনড্রয়েড মোবাইল ফোন সেট নিয়ে নেয় পার্কের স্টাফ ও কর্মচারীরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সীতি এলাকায় আলাদীনস পার্কে ঢাকার মিরপুর থেকে ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট স্কুল ও কলেজ’র প্রায় ৬ শ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বনভোজনে আসেন।
তাদের মোবাইল ফোন ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য পার্ক কর্তৃপক্ষ থেকে লকার দেওয়া হয়। ওই লকার থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ এনে পার্কের কর্মচারী রিয়াদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয় কয়েক শিক্ষার্থীর। একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় সুইমিংপুল সংলগ্ন ভবনের থাই গ্লাস ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে পার্কের কর্মচারীরা সেখানে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। পরে পার্কের কর্মচারীরা পিকনিকে শিক্ষার্থীদের বহন করা ৮টি বাস ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বনফুল আদিবাসী গ্রীণ হার্ট স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক জাকিদুল ইসলাম জানান, লকার থেকে ছাত্রদের মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়।
পার্কের মালিক আলাউদ্দিন জানান, লকারে রাখা মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে পার্কের কর্মচারী রিয়াদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর করে শিক্ষার্থীরা ও পার্ক ভাঙচুর করে আমার অনেক ক্ষতিসাধন করে। তবে বাস ভাঙচুরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, আলাদীনস পার্কে পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্কের স্টাফ ও কর্মচারীদের মারামারির ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। তবে বাকীদের আটক করার ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
Leave a Reply