স্টাফ রিপোর্টার: সাভারের আশুলিয়ায় বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রুবেল মন্ডল (৩৫) নামে যুবককে দিনে দুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৭ মে) দুপুরে উপজেলার আশুলিয়া ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম দেউন এলাকার নিহত রুবেল মন্ডলের নিজস্ব মাছের খামারের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত রুবেল মন্ডল আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দক্ষিণ পাড়া এলাকার মো. নায়েব আলী মন্ডলের ছেলে এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রুহুল আমীন মন্ডলের ছোট ভাই। রুহুল আমিন মন্ডল আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় গত ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এরপর থেকে ভাইয়ের মাছের খামার, ঝুট ব্যবসা ও বালুর ব্যাবসা দেখাশুনা করতেন নিহত রুবেল মন্ডল।
পুলিশ জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দেউন এলাকার একটি মাছের খামারের পাশে নির্জন স্থানে রুবেল মন্ডলের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শুরু করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তার বড় ভাই আলমগীর মন্ডল। এ সময় নিহতের পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল।
নিহতের বড় ভাই আলমগীর মন্ডল বলেন, রুবেল মন্ডল ঢাকায় চাকরি করতেন এবং বাকি সময় মাছের খামারে কাজ করতেন। সকালে রুবেল মন্ডলকে বাসা থেকে ডেকে আনে স্থানীয় আব্বাস মন্ডলের ছেলে শান্ত (৩০), মৃত আশক আলী মন্ডলের ছেলে কুদ্দুস মন্ডল ও তার ভাই আমজাদ মন্ডল। ১৫ দিন আগেই তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন শান্ত, মুনসুর, আকবর, কুদ্দুস, আমজাদ, জাহিদুল, জাকির হোসেন ও আলাউদ্দিন। পরে দুই দিন আগে জোরপূর্বক তারা ওই খামার থেকে মাছ মেরে নিয়ে যান।
আলমগীর মন্ডল আরও বলেন, সকালে আমি দোকানে যাওয়ার সময় দেখি আকবর, কুদ্দুস, আমজাদ, জাহিদুল, জাকির হোসেন ও আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন নামার দিক থেকে আসতেছে। তাদের হাতে একটি বাজারের ব্যাগ ছিল। যেটির মধ্যে হয়তো চাপাতি ও ছোড়া ছিল। তারা এলাকায় সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজি করে। স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা হুমায়ুন চেয়ারম্যানের নাম বলে বিভিন্ন কারখানায় ঝুট ব্যবসা করে। আমার ভাইয়ের ব্যবসা দখলের জন্যই তাকে বাসা থেকে ডেকে এনে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
স্থানীয়রা জানান, রুবেল মন্ডল সকালেও এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। সকালের পর থেকে তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। দুপুরে তার রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে আধিপত্ত্য বিস্তার ও ব্যবসা দখলের জন্যই রুবেল মন্ডলকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় মামলা দায়ের করে হত্যার কারণ ও হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।