মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের পর আতঙ্কে এলাকাবাসী

Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার:মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী অভিযোগ তুলে এক পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছিল আশুলিয়ার খেজুরটেক এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু এরপরেও আইন শৃংখলা বাহিনী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আতংকিত বোধ করছেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার (১১এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের খেজুরটেক বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

এ সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় প্রায় ৩ শতাধিক বাসিন্দা ও সন্ত্রাসী পরিবারের হাতে নির্যাতিত ভুক্তভোগীরা অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী জানান, খেজুরটেক এলাকার কোরবান আলীর ছেলে মজিবর রহমান ও তাঁর ছেলে সামিউল আলম সৈকত দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা আওয়ামী লীগের আমল থেকে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলাম বলেন, মজিবর ও তার ছেলে সৈকতের অনৈতিক কর্মকান্ডে আমরা অতিষ্ঠ। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। গত ৭ এপ্রিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বিচার ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করি। এরপর থেকে বিভিন্ন লোক মারফত আমাকে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। সেদিন মানববন্ধনে যারা অংশ নিয়েছিলেন তারা সবাই এখন আতংকিত। তারা ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়।

ঈদের কয়েকদিন আগেও স্থানীয় কয়েকজনকে জোর করে মাদক ব্যবসা করাতে চেয়েছিল মজিবরের ছেলে সৈকত। তারা রাজি না হওয়ায় তাদের মারধর করে তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে তারপর তাদের ছেড়ে দেয়। তারা ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। আমরা আইন শৃংখলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এলাকার মানুষ সন্ধ্যার পর বের হতে ভয় পায়। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে মিথ্যা মামলা দেয়ার ভয় দেখায়।

ভুক্তভোগী ইকরাম হোসেন বলেন, তিন মাস আগে মুজিবরের ছেলে সৈকত আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গেছে। ৪০০/৫০০ পিস বাবা (ইয়াবা) আমার সামনে এনে আমাকে বলে এগুলো তোর বেঁচতে হবে। আমি রাজি হই নাই দেখে আমাকে মারধর করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আমার বাসায় গিয়ে আমার রুমে তালা লাগিয়ে দেয়। মোবাইলে আমাকে হুমকি দেয় এখনো। থানায় আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এখনও বিচার পাইনাই। পুলিশ আসছিল তাদের টাকা দিয়ে পাঠায় দিয়েছে। সৈকতের কাছে রামদা, পিস্তল, চাইনিজ কুড়াল সবই আছে। আমরা ৩০ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করি, শুধু ওর ভয়ে গত ২ মাস ধরে অন্য এলাকায় বাসা নিয়ে বসবাস করতেছি। আমার কাছ থেকে জোর করে টাকাও নিয়েছে।

ভুক্তভোগী মুকুল হোসেন বলেন, আমি জামগড়া একটি দোকানে চাকরি করি। এই ঈদের ৫ দিন আগে সৈকত তার অফিসে নিয়ে আমার হাত, পা, চোখ বেঁধে আমাকে বলে তার ইয়াবা বিক্রি করতে হবে। আমি বলছি আমি পারবোনা। এরজন্য আমাকে মারছে, আমাকে ইয়াবা সহ প্রশাসনের হাতে ধরায় দেয়ার ভয় দেখাইছে। পরে আমার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করলে আমার আত্মীয় স্বজন ১০ হাজার টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়ায় নিয়ে যায়। আমি ভয়ে কোন মামলা করিনাই, থানায় যাইনাই।

আরেক ভুক্তভোগী কবির বলেন, গত ২৬ রমজানের দিন সৈকত তার লোকজন দিয়ে তার অফিসের সামনে আমাকে নিয়ে আসে কোন কারণ ছাড়া। সেখানে সৈকত ও তার সহযোগী তোফাজ্জল, রাব্বি, মনির সহ কয়েকজন উপস্থিত ছিল। আমাকে মারধর শুরু করলে আমি জিজ্ঞেস করি আমি কি করেছি। আমি জানতে চাই কেন আমার ওপর টর্চার করা হচ্ছে। পরে আমাকে পুলিশের কাছে ধরায় দেয়ার ভয় দেখায়। বিনা কারণে আমাদের মত সাধারণ মানুষকে এমন ভাবে টর্চার করায় আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও এর বিচার চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial