
স্টাফ রিপোর্টার: সাভারে ইতি খানম (৩৮) নামে এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলার ঘটনায় সোহেল নামের এক ড্রাইভারকে আটক করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
রোববার (৯মার্চ) দুপুরে সাভার পৌর এলাকার থানা বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ইতি খানম কালিয়াকৈর থানায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি সাভার থানার ভেতরে কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
সাভার মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, দুপুরে কনস্টেবল ইতি খানম নিজ কর্মস্থলে রিকশা যোগে যাচ্ছিলেন। এ সময় লোহার রড হাতে সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানউল্লাহর গাড়ি চালক সোহেল বাবু এসে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।পরে মারধরের একপর্যায়ে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় ইতিকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসামি সোহেল বাবু সাভার উপজেলা আওয়ামী মৎসজীবী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলো। আগস্ট বিপ্লবের পর গা-বাঁচাতে স্থানীয় বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় চলে আসে।
গোপন সূত্রে জানা যায়,পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানউল্লাহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীদেরকে সাথে নিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের সাথে ড্রাইভার সোহেলের আপস করাতে থানায় যায়। আপস করতে ব্যর্থ হয়ে মাথায় সমস্যা আছে বলে মাফ চেয়েও ছাড়াতে পারে নি ড্রাইভার সোহেলকে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, ওর মাথায় সমস্যা থাকলে,ওকে দিয়ে ড্রাইভিং করানো তো রিস্ক। ওর পিছনে বসে থাকাটাওতো নিরাপদ না। ওর সমস্যা থাকলে ওকে কেনো এখনো ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রেখেছে।ওকেতো অনেক আগেই বাদ দিয়ে দিতো,তানা করে ওর পিছনে বসে নিরাপত্তা পায় কিভাবে? মাথার সমস্যার কথা বলে বাঁচানোর ব্যর্থ নাটক ছিলো!
এ বিষয়ে পুলিশ কনস্টেবল ইতি খানম জানান, “আমার ডিউটি চলে কালিয়াকৈর থানায়। আমার প্রতিবন্ধী বাচ্চাকে রেখে আসতে দেরি হওয়ায় রাস্তায় জ্যামে পড়ি, নারী ও শিশু ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে ডিউটি চলে, তাই রিকশা চালককে দ্রুত এক পাশ দিয়ে যাইতে বলি। এসময় সোহেল নামের ওই ড্রাইভারকে অনুরোধ করে বলি, ভাই আমার ডিউটি চলে, আমাকে একটু যাইতে দেন, আমি পুলিশের লোক। এ কথা বলার সাথে সাথে আমাকে বলে- তুই পুলিশের লোক! তোর পুলিশের মাইরে! বলেই আমাকে মারতে শুরু করছে, রড দিয়ে মারতে শুরু করছে। আমি লাঠি ধরছি, একবার লাঠি পরে গেছে তারপর ওই লাঠি উঠায়ে আবারও আমাকে রিকশায় বসা অবস্থায় সমানে পিটানো শুরু করছে। এক্সরে করছি, আমার পুরা পা ফ্যাক্সার হয়ে গেছে। এ বিষয় আমি সাভার থানায় অভিযোগ করেছি।
এ বিষয় জানতে সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা এ প্রতিবেদকে বলেন, ওই নারী কনস্টেবল কালিয়াকৈর থানায় কর্মরত রয়েছে। সাভারের থানা রোডে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা আসামিকে আটক করেছি, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply